পূর্ণিমা শীলের কাহিনী
“...কেঁদে ওঠে এক বাংলার মা, এক এক করে এসো বাবারা
এক এক করে এসো...
মেয়েটা খুব ছোট যে আমার, মেয়েটা খুব ছোট।”
***
“সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্বদেলুয়া গ্রামের অনিল চন্দ্র শীলের মেয়ে পূর্ণিমা রানী শীল। চার বোন ও পাঁচ ভাইসহ বাবা-মায়ের সংসার ছিল সুখের। হেসে আনন্দে কাটছিল ওদের জীবন। ২০০১ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সদ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতেছিল বিএনপি জোট। দেশব্যপী চলেছিল তাদের আনন্দ-উল্লাস। সেই আনন্দ-উল্লাসের ভয়ঙ্কর শিকার হহয়েছিল বহু হিন্দু পরিবার। তারই মধ্যে এক হতভাগ্য পরিবার ছিল এই শীল পরিবার।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পূর্ণিমাকে ২০০১ সালের নির্বাচনে জয়ের পর হিন্দু হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার অপরাধে বিএনপির কয়েকজন স্থানীয় ক্যাডারের দ্বারা গণধর্ষনের শিকার হতে হয়। নবম শ্রেণীতে পড়া পূর্ণিমাকে ধর্ষণ করতে এসেছিল ১০-১২ জনের একটি দল। বাচ্চা মেয়েটা এতজনের অত্যাচার সহ্য করতে পারবে না দেখে পূর্ণিমার মা কান্না করতে করতে বলেছিলেন, “বাবা’রা আমার মেয়েটা ছোট… মরে যাবে। তোমরা একজন একজন করে আসো।”
*****
মেয়েটির বাবা আর মা আমার পায়ে এসে পড়ে; বলে, ‘হুজুর, দশজন জিহাদি মাইয়াডার উপুর একলগে ঝাপাই পরছে।’
আমি বলি, কীভাবে ওরা করলে আপনারা খুশি হন?’
মেয়েটির মা বলে, ‘হুজুর, আমার মাইয়াডার মাত্র দশ বছর, আর অহনও রক্ত দেহা দেয় নাই, ও নাবালিকা, হুজুর।’
আমি বলি, ‘রক্তের দরকার নেই, রক্ত আমরা অনেক দেখেছি।’
মেয়েটির মা পায়ে পড়ে বলে, ‘মাইয়াডা মইর্যা যাইব, হুজুর।’
আমি বলি, ‘তাহলে জিহাদিরা কীভাবে উৎসব করবো?’
মেয়েটির মা বলে, ‘হুজুর, আমার মাইয়াডা কচি, আপনেরা একজন একজন কইর্যা যান, একলগে যাইয়েন না, হুজুর।’
আমি জিহাদিদের লাইন করে দাঁড় করাই, বলি, ‘জিহ|দিরা, তোমরা একজন একজন করে যাও, বেশি সময় নিও না।’
― পাক সার জমিন সাদ বাদ, হুমায়ুন আজাদ
[বাংলাদেশ/পূর্ব-পাকিস্তান, ২০০১]
****
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন